সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
ভারতীয় গরু, মদ-বিড়ির চালান আটক হলেও বিজিবির হাতে সুনামগঞ্জে কখনো আটক হয়না কোন চোরাকারবারী!

ভারতীয় গরু, মদ-বিড়ির চালান আটক হলেও বিজিবির হাতে সুনামগঞ্জে কখনো আটক হয়না কোন চোরাকারবারী!

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জ-২৮ বর্ডারগার্ড ব্যাটালিয়নের বিজিবির টহল দল দুটি পৃথক অভিযানে শুক্রবার ভারতীয় গরুর চালান ও আমদানি নিষিদ্ধ শেখ নাসির উদ্দিন বিড়ির চালান আটক করা হয়েছে। এদিকে জেলার বিভিন্ন সীমান্তে প্রতিনিয়ত ভারতীয় মদ, বিয়ার, ইয়াবা, গরু, ঘোড়া, কয়লা, চুনাপাথর, কাঠ-বাঁশ, কসমমেটিকসহ নানা ভারতীয় চোরাই পণ্যের চালান আটক হলেও রহস্যজনক কারণে বিজিবির টহল দলের হাতে কখনো আটক হয়না কোন চোরাকারবারী।
অভিযোগ রয়েছে, মামলা এড়িয়ে যেতে চোরাকারবারীদের সাথে রফাদফার কারণে সীমান্তে দায়িত্বরত কিছু অসৎ বিজিবির সদস্য, তাদের সোর্স ও চোরাকারবারীদের মধ্যে গোপন সখ্যতায় এককরকম অলিখিত চুক্তিই হয়ে গেছে যে, চোরাই মালামাল আটক করা হলেও চোরাকারবারীদের গ্রেফতার না করে বরং চোরাকারবারীরা দৌঁড়ে পালিয়ে গেছে বলে একই গল্প প্রচার করে কিছু বিজিবির সদস্য দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছেন দিচ্ছেন চোরাচালান প্রতিরোধের নামে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে শুভংকরের ফাঁকি।
ব্যাটালিয়ন ও স্থানীয় বিজিবি জানায়, জেলার তাহিরপুরের লাউড়েরগড় সীমান্তের জাদুকাঁটা নৌপথে দুটি ট্রলার বোঝাই গরুর চালান ওপার থেকে নিয়ে আসার পথে লাউড়েরগড় বিওপির বিজিবির টহল দল শুক্রবার রাতে ১০টি গরুসহ ট্রলারগুলো আটক করে। এর পুর্বে গত ১৩ জুন মঙ্গলবার লাউড়েরগড় বিওপির একটি টহল দল সীমান্ত মেইন পিলার ১২০৭-এর নিকট হতে আনুমানিক ২শ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মোকছেদপুর নামক স্থান হতে ২৩৭ বোতল ভারতীয় অফিসার্স চয়েস মদ আটক করেছিলো। বিজিবির দাবি এসব মদের মুল্য প্রায় ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৫শ টাকা।
অপরদিকে জেলার বোগলাবাজার বিওপির অপর একটি টহল একই দিন খ্রিস্টানপাড়া থেকে অতিরিক্ত নিকোটিনযুক্ত আমদানি নিষিদ্ধ ৫৬০ প্যাকেট (১৪,০০০ হাজার শলাকা) শেখ নাসির বিড়ির আরো একটি পৃথক চালান আটক করে। বিজিবির দাবি, ট্রলার গরু, বিড়ির চালানের মূল্য প্রায় ৫ লাখ ৫ হাজার টাকা। এ ধরণের একটি মাদকের চালান আটক করলেও বিজিবি জানায়, বিজিবির টহল দলের উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাকারবারীগণ দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।
এদিকে বরাবরের মতই শুক্রবার সীমান্তে ওই দুটি অভিযানে ভারতীয় গরু ও বিড়ির চালান আটক করলেও এসব চোরাচালানের সাথে জড়িত কোন চোরাকারবারীকে বিজিবির টহল দল আটক করতে পারেনি বলে জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে সিলেট বিভাগ গণদাবী পরিষদের সুনামগঞ্জ জেলা শাখার আহবায়ক ও জেলা পরিষদ সদস্য অ্যাডভেকোট আবদুল আজাদ রুমান প্রশ্ন তুলেছেন, সব সময় সংবাদপত্রে দেখি বিজিবি মাদকসহ বিভিন্ন ভারতীয় চোরাই পণ্যের চালান আটক করেন, কিন্তু তারা কী কারণে ওইসব চোরাচালাননের সাথে জড়িতদের আটক করে আইনের হাতে সোপর্দ করতে পারছেন না, তা সচেতন মহলের বোধগম্য নয়। প্রায়ই শোনা যায় বিজিবি চোরাচালানকৃত মালামাল আটক করে, আর ওই সময় নাকী দৌঁড়ে পালিয়ে যায় চোরাকারবারী, তাহলে কী বিজিবির টহল দল চোরাকারবারীদের পেছনে দৌঁড়াতে পারছেনা বলেই তাদেরকে আটক করতে পারছেনা? এ কথা মোটেই সচেতন মহলসহ সাধারণ মানুষের নিকট গ্রহণযোগ্য ব্যাখা হতে পারেনা। তিনি অভিমত পোষণ করে বলেন, এটা সীমান্তে কর্তব্যরত কিছু বিজিবির সদস্যদের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার পাশাপাশি চোরাকারবারীদের দিন দিন ফের চোরাচালানে উৎসাহিত করার পথকে আরো সুগম করে তুলছে।
ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্ণেল নাসির উদ্দিন আহমেদ পিএসসি শনিবার বিকেলে বলেন, বিজিবির টহল দলের উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাকারবারীরা ট্রলারসহ গরু এবং বিড়ির চালান ফেলে পালিয়ে যায়, যে কারণে চোরাকারবারীদের আটক করা সম্ভব হয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com